বাংলাদেশে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধে প্রতি বছরের ন্যায় আসন্ন ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং রোজ সোমবার সকাল ৮:০০টা থেকে বিকাল ৪:০০টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে দেশব্যাপী ৬-১১ মাস বয়সী শিশুদের একটি নীল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি লাল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ৩৪০টি টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে ৬-১১ মাস বয়সী প্রায় ২১,৭৪৩ শিশু ও ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১,০৯,৬৯৬ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়া উল্লিখিত ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে জনসাধারণের মাঝে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বার্তা প্রচার করা হবে। উক্ত কর্মসূচী সফলভাবে বাস্তবায়নে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ভিটামিন ‘এ’ যে শুধুমাত্র অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন ‘এ’ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন একভূত হয়ে বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালন করে থাকে।

জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এর উদ্দেশ্য এবং প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা:

* ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের প্রাদুর্ভাব এক শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা এবং তা অব্যাহত রাখা।

* ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা।

প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা:

* ৯০ শতাংশ এর বেশি শিশু যাদের বয়স ১২-৫৯ মাস, প্রতি ছয় মাস অন্তর বছরে ২ বার লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ (দুই লক্ষ আই ইউ) ক্যাপসুল পাবে।

* ৯০ শতাংশ এর বেশি শিশু যাদের বয়স ৬-১১ মাস, প্রতি ছয় মাস অন্তর বছরে ২ বার নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ (দুই লক্ষ আই ইউ) ক্যাপসুল পাবে।

ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম:

* ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো।

* ১২-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো।

* শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমান মত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর জন্য সকলকে বলা।

ভিটামিন ‘এ’ সম্পর্কিত কিছু প্রয়োজনীয় বার্তা:

* ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ভরা পেটে খাওয়ানো শিশুর জন্য ভালো এবং নিরাপদ।

* ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার তেমন ঝুঁকি নেই। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করবেন।

* আপনি যেখানেই থাকুন না কেন দেশের যে কোন ক্যাম্পেইন কেন্দ্র থেকে আপনার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবেন।

* ভ্রমণে থাকাকালীন সময়েও আপনি রেল স্টেশনে, বাস, স্ট্যান্ডে, ফেরি ঘাটে, লঞ্চ টার্মিনালে অবস্থিত ক্যাম্পেইন কেন্দ্র থেকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবেন।

* মারাত্মক অসুস্থ শিশুকে স্বাস্থ্যকর্মী/চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।

* জন্মের পর-পরই নবজাতককে শাল দুধসহ মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করুন।

* জন্মের পর প্রথম ৬ মাস (১৮০ দিন) শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ান। পানি, মধু, চিনি বা মিসরির পানি ইত্যাদি খাওয়াবেন না।

* শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমানমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ান।

“ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ান, শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমান”